ঘুষকাণ্ডে জড়িত পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও জেলা জামায়াতের রোকন সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রুহুল আমিন শিকদারের আইনজীবী সনদ বাংলাদেশ বার কাউন্সিল স্থগিত করেছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বার কাউন্সিলের জরুরি এক সভায় এ দুই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মোহাম্মদ কামাল হোসেন শিকদার, সচিব (জেলা ও দায়রা জজ) বাংলাদেশ বার কাউন্সিল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বার কাউন্সিল স্বপ্রণোদিত হয়ে ওই অভিযোগের বিষয়ে জরুরি সভায় মিলিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন- ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল), ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান এএসএম বদরুল আনোয়ার, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান সিনিয়র অ্যাডভোকেট এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
ঘুষকাণ্ডে জামায়াতের আইনজীবীর সনদ স্থগিত
বিচারককে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে পটুয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি ও জেলা জামায়াতের রোকন সদস্য অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন শিকদারের আইনজীবী সনদ স্থগিত করেছে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল।
প্রসঙ্গত, বুধবার (২০ আগস্ট) সকালে কলাপাড়ার একটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামির জামিন নিশ্চিত করতে বিচারকের বাসায় ৫০ হাজার টাকা ভর্তি খাম ও মামলার নথি পাঠান রুহুল আমিন। এ ঘটনায় অপমানিত বোধ করে বিচারক নীলুফার শিরিন বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
বিচারক অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, এর আগেও একই মামলার এক আসামির জামিনের জন্য রুহুল আমিন হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। এবার সরাসরি বাসায় ঘুষ পাঠানোয় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করতে বাধ্য হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, পিপি রুহুল আমিন আগেও বিভিন্ন মামলায় আসামি পক্ষের হয়ে তদবির করেছেন এবং আদালতের আদেশ প্রত্যাশামতো না হলে বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে চাপ সৃষ্টি করেছেন। আলোচিত ‘জুলাই শহীদ জসিম কন্যা লামিয়া ধর্ষণ মামলা’তেও তিনি আসামি পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) জেলা আইনজীবী সমিতি এক জরুরি সভা আহ্বান করে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন শিকদারের প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করা হয় এবং তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়। সমিতির লিখিত এই সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসক, দুদক, আইন মন্ত্রণালয় ও প্রধান বিচারপতির কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
একইদিন রাতে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে পেশাগত অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর জরুরি সভায় বসে জেলা ও পৌর জামায়াত নেতারা। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তার সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত রেখে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, যা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।