যে খবরে কোমা থেকে জেগে উঠলেন তরুণী

চীনের হেনান প্রদেশের ১৮ বছর বয়সী জিয়াং চেননান নামের এক কিশোরী হৃদ্‌যন্ত্রের এক বিরল সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে কোমায় চলে যায়। গত জুনে জাতীয় কলেজ ভর্তি পরীক্ষা ‘গাওকাও’ শেষ করার কিছুদিন পরই তার জ্বর ও বুকে তীব্র ব্যথা শুরু হয়। চিকিৎসকেরা জানান, সে ফুলমিন্যান্ট মায়োকার্ডাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে—একটি প্রাণঘাতী রোগ, যা হঠাৎ হৃদ্‌যন্ত্রে তীব্র প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং দ্রুত জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি করে।

অবস্থা অবনতির পর জিয়াংকে বড় হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এবং তিনি ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে কৃত্রিম হৃদ্‌যন্ত্র-ফুসফুসের সহায়তায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরিবারও তখন দিশেহারা-বাবা আগের বছর দুর্ঘটনায় পঙ্গু, মা সড়কের ধারে খাবার বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন, আর চিকিৎসা ব্যয়ে ইতোমধ্যে ঋণ হয়েছে কয়েক লাখ ইউয়ান। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের। 

এমন কঠিন সময়েও এল এক আশার আলো। কোমায় যাওয়ার অষ্টম দিনে জিয়াং চেননানের বাসার ডাকবাক্সে পৌঁছাল তার বহু প্রতীক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চিঠি। স্বপ্নপূরণের পথে প্রথম সাফল্যের খবর পেয়ে জিয়াংয়ের মা ছুটে গেলেন হাসপাতালে, আইসিইউতে মেয়ের কানে কানে মৃদু কণ্ঠে বললেন, “আমরা সবাই খুব খুশি, তুমি কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেছো।”

অবিশ্বাস্যভাবে তখনই মেয়ের চোখের পাতা কেঁপে উঠল। চিকিৎসকেরা এটিকে জ্ঞান ফেরার প্রাথমিক সাড়া হিসেবে দেখলেন। পরের দিনই ঘটল বিস্ময়কর ঘটনা, জিয়াং জ্ঞান ফিরে পেলেন, ভিডিও কলে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বললেন এবং দুই হাত তুলে ‘ওকে’ ভঙ্গি করে নিজের খুশি প্রকাশ করলেন।

বর্তমানে জিয়াং চেননানের হৃদ্‌যন্ত্রের কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক এবং তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। চিকিৎসকদের নিরলস চেষ্টায় সুস্থ হয়ে ওঠা জিয়াং আগামী সেপ্টেম্বর থেকে হেনান প্রদেশের হুয়াংহে ট্রান্সপোর্টেশন কলেজে পড়াশোনা শুরু করবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *