চব্বিশের বিজয়ীদের কার্যকলাপে অতিষ্ঠ জনগণ : কাদের সিদ্দিকী

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ীদের কার্যকলাপে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল শহরের নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এ সময় কাদের সিদ্দিকী বলেন, “চব্বিশের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিজয়কে আমি স্বাধীনতার খুব কাছাকাছি মনে করি। এই বিজয়ের সাফল্য সব সময়ই কাম্য ছিল। তবে বিজয়ীদের কর্মকাণ্ডে এখন দেশের মানুষ বিরক্ত ও অতিষ্ঠ। আমি ভেবেছিলাম, তাদের এই অর্জন হাজার বছর স্থায়ী হবে। কিন্তু মাত্র এক বছরের ব্যবধানে সেই বিজয় ধ্বংসের মুখে পড়বে— এটা কেউ আশা করেনি।”

এ সময় তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে গতকাল মব করে একটি আলোচনা অনুষ্ঠান বানচাল করা প্রসঙ্গেও কথা বলেন। কাদের সিদ্দিকী বলেন, আজকে রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি আলোচনা সভায় আমাদের নেতা বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী গিয়েছিলেন। ড. কামাল হোসেন প্রধান অতিথি ছিলেন। জেড আই খান পান্না উপস্থিত ছিলেন। মব দিয়ে তাদের অনুষ্ঠান বানচাল করা হয়েছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে কারও সভা-সমাবেশ বানচাল করার সাংবিধানিক অথবা আইনগত কোনো সুযোগ নেই। এ ঘটনায় ‘মঞ্চ ৭১’-এর যারা ছিলেন, পুলিশ কমবেশি সবাইকে ধরে নিয়ে গেছে। তাদের সসম্মানে মুক্তি দেওয়া হোক। ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূসের কাছে আমি আশা করছি।

এ সময় তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের স্বৈরাচারের দোসরদের চাইতে এই স্বৈরাচার তো অনেক বড় স্বৈরাচার। মানুষকে কথা বলতে দিচ্ছে না, মত প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা সুন্দর ও নিরপেক্ষভাবে একটি ভোট অনুষ্ঠান। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে, এটির সংস্কার দরকার, নিরাপত্তা আনা দরকার। আর অন্য কিছু অনির্বাচিত কারও দ্বারাই সম্ভব না এবং উচিত না। সেটা মানুষ মেনে নেবে না।

নিজের বড় ভাই লতিফ সিদ্দিকী সম্পর্কে কাদের সিদ্দিকী বলেন, লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে টাঙ্গাইলের রাজনীতির অনেক কিছুই হতো না। যেমন বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতো না, লতিফ সিদ্দিকীর জন্ম না হলে আমরা রাজনীতিতে আসতাম না। রিপোর্টার্স ইউনিটির ঘটনায় সারা দেশের জেগে ওঠা ও প্রতিবাদ করা উচিত। ঘুমিয়ে থাকলে আমাদের সম্মান, নিরাপত্তা ও ইজ্জত থাকবে না। সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধারা আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি অথবা অন্য কোনো দলের মুক্তিযোদ্ধা নন, তারা বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা। তারা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন, এ চেতনা তাদের থাকা দরকার।

তিনি বলেন, “রাজনীতিকে উপেক্ষা করে এভাবে দেশে মব তৈরি করা, অরাজকতা সৃষ্টি করা এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানো মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারে, তাহলে তাদের সরে যাওয়া উচিত। আর যদি তারা ক্ষমতায় থাকেন, তবে জনগণের দায়িত্ব নিয়েই থাকতে হবে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *